Short Description
মানিকগঞ্জের হাজারি গুড়। সারা দেশে এক নামেই পরিচিতি বিশেষ এই খেজুর গুড়ের। লোভনীয় স্বাদ আর মনমাতানো সুগন্ধে অতুলনীয় হাজারি গুড় এখন দেশ ছাড়াও বিদেশে লন্ডন, ইতালি, ভারতসহ নানা দেশে সমাদৃত। মানিকগঞ্জের হাজারি গুড় শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে টিকে আছে। এ গুড় উৎপাদনের সঙ্গে বংশ পরম্পরায় যুক্ত রয়েছে হাজারি পরিবার।
ইংল্যান্ডের রানী এলিজাবেথও এ গুড় খেয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়কে সরকারিভাবে স্বীকৃতিস্বরূপ জেলার ব্র্যান্ডিং নামকরণ করা হয়েছে ‘ঝিটকার হাজারি গুড়’ নামে।
বর্তমানে প্রায় শ’খানেক গাছি হাজারি গুড় তৈরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তবে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ও অতিমাত্রায় কুয়াশায় গুড়ের উৎপাদন কম হচ্ছে বলে গাছিরা জানিয়েছেন।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা, বাল্লা, গোপিনাথপুরসহ তার আশপাশের গ্রামে সরেজমিন দেখা যায়, তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু হয় সেখানকার গাছিদের কর্মযজ্ঞ। খেজুর রসের তৈরি হাজারি গুড়ের জন্য বিখ্যাত এই অঞ্চলের বাড়ির আঙিনা এবং বিভিন্ন কাঁচাপাকা রাস্তার পথপ্রান্তে শোভা পাচ্ছে সারি সারি খেজুর গাছ। আর খেজুর গাছ এ অঞ্চলের অসংখ্য পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্বাহের উৎস।
সরেজমিন দেখা যায়, গুড় তৈরির বিভিন্ন কারিশমা। প্রতি এক হাঁড়ি রসের জন্য আলাদা আলাদা জ্বাল করতে হয়। এরপর তা একটি মাটির পাত্রে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ফুটন্ত রস ছেকে ঢেলে দেয়া হয় একটি খাড়া মাটির পাত্রে, যা জালা নামে পরিচিত। ওই (জালা) দু’পাশে দু’জন ব্যক্তি বসেন কাঠ কিংবা তালের লাঠি নিয়ে। এরপর দু’জন মিলে অসংখ্যবার ঘুটা দিতে দিতে ধবধবে সাদা বাদামি রং হলে তৈরি হয় সুস্বাদু হাজারি গুড়।